
Mahakumbh 2025 প্রয়াগরাজে ৪২ ঘণ্টা! ধর্ম নয়, পুণ্যও নয়, মানুষের মিলনমেলায় এক পাত্রে গোটা ভারত
মেলায় গিয়ে বুঝলাম, এই হল ভারতবর্ষ। নানা ধরনের মানুষ। নানা রঙের সমাহার। নানা ধরনের খাবারদাবার। আর ভাষা? থাক সে কথা! মনে হচ্ছিল, চেখে নিতে চেয়েছিলাম এই ভারতকেই।
কুম্ভ নিয়ে আগ্রহ আচমকাই তৈরি হয়েছিল। কিন্তু যাব কী ভাবে! কোথাও টিকিট নেই! না ট্রেন, না প্লেন। প্রয়াগরাজে বহু বিমান যাচ্ছে। তা-ও টিকিট পাচ্ছিলাম না! টিকিটের দামও আকাশছোঁয়া। শেষে ট্রাভেল এজেন্টকে বললাম, চেষ্টা করে দেখুন। যদি কেউ টিকিট বাতিল করে! যদি বিড়ালের ভাগ্যে কোনও ভাবে শিকে ছেঁড়ে! শেষে রবিবার বেলার দিকে ফোন এল। টিকিট হয়েছে। এক সহকর্মী ও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে সোমবার সকালে আমার টিকিট পাকা! ফোনে ট্রাভেল এজেন্টের সাবধানবাণী ভেসে এল, ‘‘এয়ারপোর্টে একটু আগে পৌঁছবেন।’’
বাবা-মা শিবের উপাসক। আমার নামে তাই শিবের ‘ছোঁয়া’ রেখেছেন তাঁরা। ভাই শিবপ্রতিমের তা-ই। যদিও আমি কোনও কালেই ধার্মিক নই। কিন্তু কুম্ভ নিয়ে উৎসাহটা তৈরি হয়ে গেল! এত মানুষ যাচ্ছেন। স্নান করছেন। ছবি দেখে মুগ্ধ হচ্ছি আর ভাবছি, এক বার নিজের চোখে এই মহা মিলনমেলাটা দেখা যায় না?
বিমান ছাড়বে সকাল সাড়ে ৮টায়। বাড়ি থেকে বেরোলাম ভোর সাড়ে ৫টায়। বিমানবন্দরে গিয়ে বুঝলাম, কেন ট্রাভেল এজেন্ট আগে পৌঁছে যেতে বলেছিলেন। রানওয়েতে যে বাস পৌঁছে দিল, সেটাই একটা ‘মিনি ভারত’। বেশির ভাগই অবাঙালি। সকলের পোশাকেই নানা রঙের ছোঁয়া। হঠাৎ কানে এল, ‘‘কী রে? তোরাও যাচ্ছিস? কবে দেশে ফিরলি?’’ দু’জোড়া বাঙালি দম্পতির কথাবার্তায় বুঝলাম, ওঁরা কাতার থেকে এসেছেন। আরও পরে আসার কথা ছিল। কিন্তু কুম্ভে যাবেন বলে মাসখানেক আগেই দেশে ফিরেছেন। যাচ্ছেন আমাদের সঙ্গেই। শুধু কাতার? কাতারে কাতারে মানুষ! দেশের নানা প্রান্ত থেকে প্রয়াগরাজের দিকে চলেছেন তাঁরা। তারই একটা ছোট সংস্করণ আমাদের বিমান। যার পেটে ভরা বিহার, উত্তর-পূর্ব ভারত, ওড়িশা। সকলেই চলেছেন প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভে।
Source : www.anandabazar.com